ফাইল ছবি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচালে দেশব্যাপী নাশকতার পরিকল্পনা করছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ। ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক ও লাখ লাখ ডলারের বাজেট নিয়ে পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিতে দেশজুড়ে একাধিক নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন বানচালের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবন থেকে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন আব্দুল কাদির নামে এক আওয়ামীলীগ নেতা। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের সাবেক এমপি ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুর নির্দেশে আব্দুল কাদির ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে এই নাশকতার ছক বাস্তবায়নে নেমেছেন। ইতোমধ্যে দেশে ফিরে বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে বৈঠক ও অর্থায়নের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে নাশকতার 'অর্থনৈতিক বাজেট' হিসেবে কয়েক লাখ ডলার বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়ে এসেছেন। এই বিপুল পরিমাণ অর্থই নির্বাচনের আগে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আড়াইহাজারের ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের মারয়াদী দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদির আবেদ আলীর ছেলে। গত ২৭ অক্টোবর আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন তিনি। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর আব্দুল কাদিরকে অভ্যর্থনা জানান বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে সক্রিয় হন এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সাথে একাধিক গোপন বৈঠক করেন। এই বৈঠকগুলোতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় সুনির্দিষ্টভাবে নাশকতার পরিকল্পনা এবং অর্থায়নের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্র দাবি করছে।
আওয়ামীলীগের কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে যে, সম্প্রতি কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর নির্দেশেই আব্দুল কাদির পরিকল্পিতভাবে দেশে ফিরে আসেন। নজরুল ইসলাম বাবুল পলাতক থাকায় তিনি দেশের বাইরে থেকে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক সাবেক এমপিদের সাথে মিলে পরিকল্পনা করে তাকে দেশে পাঠান। আব্দুল কাদিরের মূল লক্ষ্য হলো সাধারণ নির্বাচনকে বানচাল করার উদ্দেশ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা সৃষ্টি করা।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি এড়িয়ে নেতাকর্মীদের কাছে বাজেট পৌছে দেয়া ও তথ্য সরবরাহ করতে এরকম তৃণমূলের এক কর্মীকে বেছে নেয় দলটি। শুধু কাদির নয় এরকম কর্মী প্রতিটি জেলায় ঠিক করেছে দলটি। বিভিন্ন পর্যায়ে আন্দোলনে নেতাকর্মীদের মাঠে নামানো, তাদের সংগঠিত করা, তাদের জামিন করানো, গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় দেয়া, পরিবহনের ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন দিক নির্দেশনা পৌছে দিতে তিনি কাজ করবেন দেশে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে মুঠোফোনে কাদিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ আমেরিকায় ব্যাবসা করি। প্রায়ই আমি দেশে আসা যাওয়া করি। পাঁচ আগষ্টের পর আড়াইহাজারের সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু আমেরিকা আসলে তার সাথে আমার দেখা হয় কথাও হয়।
তিনি আরও বলেন, বাবুকে সারা বাংলাদেশ চেনে আমিও চিনি। তবে তিনি আমাকে কোন ডলার দেননি দেশে নিয়ে আসরা জন্য। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে ভুয়া।
বাবুর সাথে ছবির প্রসঙ্গে তিনি জানান, বাবু ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি এমপিও ছিলেন। তার সাথে অনেকেরই ছবি আছে তেমন আমারও ছবি আছে। যেহেতু আমরা একই এলাকার মানুষ।
নির্বাচন বানচালে ছাত্রলীগের সাথে আঁতাত প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমি বিদেশ থেকে ফেরার পর আমার ছেলে ও ভাতিজারা আমাকে রিসিভ করে। এর বেশি কিছু না। আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মীর সাথে আমার দেখা বা কথা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী জানান, আমি বিষয়টি জানলাম। তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

