
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জে ছোট-বড় এক হাজার ৮৩৪টি পোশাক কারখানা রয়েছে। সূত্র জানায়, বিভিন্ন কারণে এক বছরে ২৬টি পোশাক কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে। এতে চাকরি হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৪২ জন। বন্ধ কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে নিট গার্ডেন, একে ফ্যাশন লিমিটেড, লা মেইজন কচুর লিমিটেড, মোল্লা নিট ফ্যাশনসহ অন্তত আটটি বড় প্রতিষ্ঠান। এদিকে কারখানাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার কারণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পোশাক কারখানার মধ্যে বেশির ভাগই বন্ধ হয়েছে আর্থিক সংকট এবং পর্যাপ্ত কাজের অভাবের কারণে। স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও গত এক বছরে নারায়ণগঞ্জের ১৯টি কারখানা অস্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কারখানা লে-অফ করা হয়েছে। তবে নারায়ণগঞ্জ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর দিচ্ছে ভিন্ন হিসাব। তাদের হিসাবে, নারায়ণগঞ্জে নিবন্ধনকৃত পোশাক কারখানা এক হাজার ১০টি। এর মধ্যে গত এক বছরে ৯টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্ধ হয়ে যাওয়া নিট গার্ডেন কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল হোসেন রনি বলেন, ‘কারখানায় প্রায় সাড়ে ৪০০ শ্রমিক কাজ করত। দৈনিক ১০ হাজারেরও বেশি পোশাক তৈরি হতো। আর টাকার অঙ্কে বলতে গেলে প্রতিদিন ২০ হাজার মার্কিন ডলারের সমমূল্যের পোশাক তৈরি হতো। ঋণ খেলাপের কারণেই মূলত আমাদের কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আমাদের প্রত্যেক শ্রমিকের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হয়েছে।’ এএসটি গার্মেন্টসের মালিক মো. আতিকুর রহমান বলেন, কার্যাদেশ কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভর্তুকি দিয়ে কয়েক মাস কারখানাটি পরিচালনা করা হয়েছিল। বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এম এ শাহীন বলেন, নারায়ণগঞ্জে যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলোর বেশির ভাগ শ্রমিক বেঁচে থাকার জন্য এখন অটোরিকশা চালাচ্ছেন, কিছুসংখ্যক শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি মোরশেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, কয়েকটি কারখানা আগে থেকেই বন্ধ হওয়ার উপক্রম ছিল। বিগত সরকারের আমল থেকেই ফ্যাক্টরিগুলো দুর্বল অবস্থায় ছিল। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব থেকেই বন্ধ শুরু হয়। ব্যাংকের সুদহার বেড়ে যাওয়া, কার্যাদেশ কমতে থাকা—এসব কারণে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ না এলে আগামী দিনে আরো কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।
সূত্রঃ কালের কন্ঠ