সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

|

ভাদ্র ৩০ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

হাসপাতালে একসঙ্গে ছয় শিশুর জন্ম দিলেন না.গঞ্জের প্রিয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হাসপাতালে একসঙ্গে ছয় শিশুর জন্ম দিলেন না.গঞ্জের প্রিয়া

ফাইল ছবি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এক গৃহবধূ একসঙ্গে ছয়টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তবে জন্মের পরপরই এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। 

রোববার সকাল ৯টার দিকে গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে এই শিশুদের জন্ম হয়। ওজন কম হওয়ায় বাকি ৫ নবজাতকের শারীরিক অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
 
প্রসূতি নারীর নাম মকসুদা আক্তার প্রিয়া। ছয় নবজাতকের মধ্যে তিনজন ছেলে এবং তিনজন মেয়ে। 

ঢামেকে প্রিয়াকে নিয়ে আসা তাঁর এক আত্মীয় জানান, প্রিয়ার স্বামী মোহাম্মদ হানিফ কাতার প্রবাসী। সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নিজ বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রিয়াকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তিনি একে একে ছয়টি সন্তানের জন্ম দেন।
 
প্রিয়ার ননদ ফারজানা আক্তার জানান, তাদের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার খাজুরিয়া গ্রামে। প্রিয়ার গর্ভধারনের ২৭ সপ্তাহ চলছিল। এলাকায় নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছিলেন। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে জানতে পারি, একটি-দুটি নয়; তাঁর গর্ভে পাঁচ সন্তান রয়েছে। 

তিনি জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে প্রিয়া নিজের বড় বোন লিপির বাসায় আসেন। সেখান থেকে মনোয়ারা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সর্বশেষ গত রাতে ব্যথা শুরু হলে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নবজাতকদের ওজন অনেকটাই কম। তিনজনের ওজন প্রায় ৯০০ গ্রাম এবং বাকি তিনজনের ৮০০ গ্রাম। এর মধ্যে জন্মের পরপরই এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। ওজন কম হওয়ায় নবজাতকদের শারীরিক অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। 

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ইউনিট-১-এর অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক ডা. আবিদা সুলতানা বলেন, সকাল ৯টার দিকে স্বাভাবিক প্রসবে ছয়টি সন্তানের জন্ম দেন প্রিয়া। এটি চিকিৎসা পরিভাষায় পূর্ণাঙ্গ ডেলিভারি বলা যাবে না, বরং একে বলা হয় ‘ইনঅ্যাবিটেবল অ্যাবরশন’। গর্ভধারণের সময় ছিল মাত্র ২৭ সপ্তাহ, যেখানে ২৮ সপ্তাহকে ভায়াবল (টিকে থাকার উপযোগী) সময় ধরা হয়। 

তিনি আরও বলেন, এর আগে তাঁর একটি পূর্ণবয়স্ক সন্তান জন্ম নিয়েছিল, তবে সেটি প্রসবের সময় মারা যায়। এই ছয়টি শিশুর জন্ম হয়েছে ওভুলেশন ইন্ডাকশন ড্রাগ সেবনের ফলে, যা বহু সন্তান গর্ভধারণে সহায়ক হয়ে থাকে। তবে জরায়ুর সীমিত ধারণক্ষমতার কারণে গর্ভকাল পূর্ণ হওয়ার আগেই প্রসব হয়ে গেছে। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুদের সুস্থ করে তোলার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। চিকিৎসকদের মতে, এখন সবকিছু নির্ভর করছে শিশুগুলোর স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার সক্ষমতার ওপর।