বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

|

কার্তিক ২৭ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

নারায়ণগঞ্জে নাশকতা ঠেকাতে সতর্ক পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২০:২৮, ১২ নভেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জে নাশকতা ঠেকাতে সতর্ক পুলিশ

প্রতীকী ছবি

আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্ভাব্য নাশকতা প্রতিরোধে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান, বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল। 

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ও বুধবার (১২ নভেম্বর) দুই দিনে জেলায় ২৯ জন আওয়ামীকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে উত্তেজনা ও সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলটির পলাতক নেতাকর্মীরা নানা উসকানি ও হুমকি ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত কয়েক রাতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে এমন ঝটিকা মিছিলের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। ফলে ১৩ নভেম্বর বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা না করলেও বিষয়টি একেবারে হালকাভাবে নিচ্ছে না প্রশাসন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী বলেন, “১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আমরা সাইবার মনিটরিং, টহল এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করেছি। এটি গুজব হোক বা বাস্তব পরিকল্পনা—আমরা প্রতিটি তথ্য যাচাই করছি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা সতর্ক আছি।”

একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “আওয়ামী লীগের বিদেশে পলাতক কিছু নেতা অনলাইনে ‘লকডাউন’ ঘিরে নাশকতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। দেশে তাদের সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হলেও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”

নারায়ণগঞ্জে বিশেষ অভিযানে বেশ কয়েকজন আওয়ামীপন্থী নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের করাটিয়া এলাকায় হোম টাউন সিটি প্রকল্পের ভেতর গোপন বৈঠক থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের চার নেতাকে আটক করা হয়। তারা হলেন ভোলাব ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আমির হোসেন (৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক গাফফার মোল্লা, তারাবো পৌরসভার ছাত্রলীগ নেতা রিফাত আহমেদ অমি এবং ভুলতা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ নেতা সিরাজ মিয়া।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউন কর্মসূচির প্রস্তুতি নিতে তারা গোপনে বৈঠক করছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা দেশে নাশকতা সৃষ্টি করে অস্থিতিশীলতা তৈরির পরিকল্পনা করছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ও তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।”

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশও সোমবার রাতে পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন (২৫), কাশিপুরের সুমন (৩৭), শাহ আলম (৫৫), দাপা ইদ্রাকপুরের মহন মিয়া (৩২) এবং শিহাচরের বাদল (৪০)।

 ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, “গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি তারা নাশকতার পরিকল্পনাও করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী আরও বলেন, “আমরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জেলার প্রতিটি থানায় অভিযান জোরদার করেছি। কেউ যদি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করে, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। জনগণকে ভয় না পেয়ে শান্ত থাকতে অনুরোধ করছি।”