শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

|

কার্তিক ৩০ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

মাসুদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একট্টা বাকিরা, অন্য যে কারো পক্ষে কাজে রাজি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২০:৫১, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

মাসুদুজ্জামানের বিরুদ্ধে একট্টা বাকিরা, অন্য যে কারো পক্ষে কাজে রাজি

নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। 

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে একযোগে মাঠে নামার এই ঘোষণা দেন মনোনয়ন বঞ্চিত বিএনপি নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তারা। 

এর আগে বিকেলে হঠাৎ নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে সাড়া পড়ে যায় মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনের খবরে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে হঠাৎ করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মহানগর বিএনপির নেতারা। আগামী ১৭ নভেম্বর সোমবার শহরের মিশনপাড়া এলাকায় বিশাল জনসভার ডাক দিয়েছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বলেছেন, এই আসন থেকে জনগণ আমাকে একাধিকবার নির্বাচিত করেছেন। ত্যাগীরা যদি সুযোগ না পায় তাহলে সামনের দিনে রাজনীতি অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। 

তিনি আরও বলেন,আমাদের একটাই পরিচয় আমরা ধানের শীষের লোক। সামনে কটিন সময় আসছে। গত ১৭ বছর আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার কীভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন এটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের আগামী নির্বাচনে অবশ্যই বিজয়ী হতে হবে। আমরা সঠিক নেতৃত্বের জন্য তাকিয়ে আছি। জনগণ কখনও ভুল করে না। আমাকে তিনবার নির্বাচিত করেছে কারণ এই দলকে মানুষ ভালবাসে। এটিই হয়ত আমার শেষ নির্বাচন। আমিও যদি মনোনয়ন না পাই এখানে যেই মনোনয়ন পাবে তার পক্ষে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল বলেন, আমরা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। অপ্রত্যাশীত ভাবে একজনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে যেটা আমরা ভাবতে পারিনি। তিনি দুই মাস আগে দলে যোগ দিয়েছেন। আমরা এখন মাঠে দেখছি প্রতিটি নেতাকর্মী ও ভোটারের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের প্রার্থীর জয়লাভ আমাদের প্রত্যাশা। অপরিচিত মানুষকে ভোটাররা ভোট দিবে না। আমরা চাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন আমাদেরই থাকুক। আমরা এ আসনটি বিজয়ী করে বিএনপিকে উপহার দিবো। এই মনোনয়ন কনফার্ম না। আমরা এটা রিভিউ করার আবেদন করছি। আমাদের মধ্যে যে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হোক আমরা তাকে বিজয়ী করবো।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, এখানে সকলে জেল জুলুম খেটেছি একসাথে। এখানে সকলে সেই পর্যায়ের লোক। সকল আন্দোলনে আমরা নেতৃত্ব দিয়েছি। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে যাকে প্রার্থী করা হয়েছে এ ধরনের লোকের কথা আমরা চিন্তাও করিনি যে এধরণের লোক প্রার্থী হতে পারে। এই প্রার্থী ঘোষণার পর সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বুকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই প্রার্থীর সাথে নেতাকর্মীরা পরিচিত নয়, তাকে দলীয় কাজে কোনদিন পাইনি। আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, দলের মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির কাছে একটি দরখাস্ত দিয়েছি। এ আসনে প্রাথমিক ভাবে যাকে প্রার্থী দেয়া হয়েছে তাকে বদলে মহানগর বিএনপির যাকে ইচ্ছা তাকে মনোনয়ন দেয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, তিনি কোনদিন বিএনপি করেনি। গত সরকারের আমলে ব্যাবসায়িক সুবিধা নিয়েছে, নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়েছে। আমরা চাই তাকে পরিবর্তন করে বিএনপির মনোনয়ন এমন কাউকে দেয়া হোক যে অন্তত বিএনপি করেছে, রাজপথে আন্দোলন করেছে জেল খেটেছে। যারা দুঃসময়ে বিএনপি ছেড়ে চলে যাবে না। এধরণের ব্যাক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হোক।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, ছোট ভাই যেমন বড় ভাইয়ের কাছে আবদার জানায় তেমনি আমরাও আমাদের অভিভাবক আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আবেদন জানাই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়। আমরা চাই যারা মাঠের লোক যারা ত্যাগী, যারা জেল জুলুম খেটেছেন তারাই যেন আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন পায়। 

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা বলেন, আমাদের মধ্যে বিভেদ থাকতে পারে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপু কাকার সাথে আমার বিরোধ ছিল এটা সবাই জানে। কিন্তু আমি যখন টিপু কাকাকে জড়িয়ে ধরেছি তিনি কিন্তু সেটা মনে রাখেননি। আমরা চাই ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হোক। 

তিনি আরও বলেন, কোন কারণে যদি আমার বাবা আবুল কালাম মনোনয়ন নাও পায় এই মঞ্চে থাকা যেই মনোনয়ন পাবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। আমরা একসাথে জেল খেটেছি, হাজিরা দিয়েছি। আমাদের কষ্ট বাইরের মানুষজন বুঝবে না। ত্যাগীরা মনোনয়ন পেলে আমি ভাববো যে একজন অভিভাবকের অধীনেই আমি নির্বাচন করছি।