
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধু হত্যা মামলাসহ ১৪ মামলার দুর্ধর্ষ আসামি মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
বুধবার (২১ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব-১১ এর সিপিসি ১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
এর আগে ২১ মে বিকেলে ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকা থেকে মোফাজ্জলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু (৫০) ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকার তালেব হোসেনে ছেলে।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন পশ্চিম দেওভোগ নুর মসজিদ রোড এলাকায় একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে গত ৬ জানুয়ারি ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) এর সাথে আসামি আসাদুজ্জামান ওরফে মুন্না এর নিকট ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ভিকটিমের স্বামী পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। ভিকটিম তার স্বামীকে বাধা নিষেধ করায় তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করত। তারপরও ভিকটিম সংসার করে আসছিল। সংসার করাবস্থায় দাম্পত্য জীবনে ভিকটিমের গর্ভে একটি পূত্র সন্তান জন্য লাভ করে। নাম মোরসালিন যার বছর ২ বৎসর। সন্তান হওয়ার পর আসামি পরকীয়া চালিয়ে আসছিল। ভিকটিম অন্যান্য আসামিদের নিকট পরকীয়ার বিষয়টি জানিয়ে বিচার চাইলে তারা বিচার না করে বরং ভিকটিমকে গালিগালাজ করত। বিষয়টি ভিকটিম তার পরিবারকে জানানোর পর পারিবারিক ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস মিমাংসা হয়। তারপরও ১নং আসামি সংশোধন না হয়ে বরং ভিকটিমকে সময় না দিয়ে অধিক রাত্রে বাসায় ফিরত। এই নিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য চলে আসছিল। ভিকটিম তার সন্তানের ভবিষ্যত এর দিক বিবেচনা করে মারধরের বিষয়টি গোপন রাখত। ভিকটিম তার স্বামীকে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার কারনে অন্যান্য আসামিদের ইন্ধনে ১নং আসামি ভিকটিমকে মারধর করে। আসামিরা ভিকটিমকে হুমকি দিত যে, মারধরের ঘটনা ভিকটিমের পরিবারকে জানালে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবে। যে কারনে ভিকটিম ভয়ে সমস্ত ঘটনা গোপন রাখত। গত ২ জানুয়ারি তারিখ ভিকটিম তার পিতার বাসায় আসার কথা ছিল কিন্তু না আসায় তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। এদিন আসামিদের বাড়ির পাশে এক ব্যক্তি ভিকটিমের চাচার মোবাইলে ফোন দিয়ে জানায় যে উক্ত আসামিরা ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে তাদের ঘরের মধ্যে আটক করে রেখেছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পরিবার সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে পাচঁটার সময় ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া নয়ামাটি মার্কাস মসজিদ সংলগ্ন ১নং আসামির বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় ১নং আসামির রুমে জানালার গ্রিলের সাথে ভিকটিম গলায় ওড়না ও গামছা দ্বারা বাধা পা মাটিতে ডান হাতের আঙ্গুলে এবং বাম হাতের বাহু সহ গলায় লালচে দাগসহ মৃত অবস্থায় ঘাড় বেকে ঝুলছে। পুলিশ সংবাদ পেয়ে আসামিদের বাড়িতে আসে এবং ভিকটিমের লাশের সূরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে মৃত দেহের ময়না তদন্ত করার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।