শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

|

ভাদ্র ২০ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

ঝুঁকিপূর্ণ লাঙ্গলবন্দ সেতু, জোড়াতালি দিয়ে যান চলাচল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঝুঁকিপূর্ণ লাঙ্গলবন্দ সেতু, জোড়াতালি দিয়ে যান চলাচল

ফাইল ছবি

দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়কপথগুলোর একটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে যুক্ত করেছে সড়কটি। তবে মহাসড়কটিতে দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ সেতু। ১৯৭৮ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত দুই লেনের সেতুটি অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পশ্চিম পাশের রেলিং ভেঙে গেছে। কিছু স্থানে পিচ উঠে অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। ছয় লেন সড়কে গাড়ি চলাচল বাড়লেও সরু সেতুর কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। যদিও জোড়াতালি দিয়ে সেতুতে যান চলাচল সচল রেখেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।

মেঘনা টোল প্লাজা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লাসহ সাতটি জেলায় যানবাহন চলাচল করে মহাসড়ক দিয়ে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন মহাসড়ক দিয়ে ২২ হাজার যানবাহন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার দিকে আসা-যাওয়া করে। সে হিসাবে প্রতি মিনিটে প্রায় ৪০-৫০টি যানবাহন চলাচল করে এ মহাসড়কে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার মো. আব্দুল কাদের জুয়েল জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে খানাখন্দ ও জরাজীর্ণ লাঙ্গলবন্দ সেতুর কারণে প্রায় সময় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। মদনপুর-গাজীপুর বাইপাস সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির চাপ বাড়ছে। স্বল্প জনবল দিয়ে মহাসড়ক সচল রাখতে হিমশিম খেতে হয় তাদের।

নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১৯৭৮ সালে নির্মিত হয় লাঙ্গলবন্দ সেতু। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে সেতুটি অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সওজ বিভাগ জোড়াতালি দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য উপযোগী করে রেখেছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী তিশা পরিবহনের চালক সালেহ আহমদ জানান, ‘প্রায় সময়ই সেতুতে যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। কারণ সেতুটি বেশ পুরনো। সওজ বিভাগ গাড়ি চলাচল সচল রাখার জন্য মেরামত করলেও বৃষ্টি হলেই পিচ উঠে যাচ্ছে। গর্তের কারণে সেতুতে যানবাহন চলাচল করে ধীরগতিতে। এতে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।’

এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু পর্যন্ত দুই পাশে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। বিশেষ করে মেঘনা টোলপ্লাজার সামনে দুটি লেনের প্রবেশপথে পিচ উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। টোল লাইনে প্রবেশ করতে হয় ধীরগতিতে। এ কারণে অনেক সময় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

ট্রাকচালক সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘লাঙ্গলবন্দ সেতুর কারণে আমাদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত বিকল্প একটি সেতু নির্মাণ করা দরকার।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল জানান, দেশের লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সচল রাখতে সেতুটি মেরামত করা প্রয়োজন। অথচ সেখানে সওজ বিভাগের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। সেতুটি মেরামতের পাশাপাশি নতুন সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে লাঙ্গলবন্দ সেতু সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। এছাড়া স্থায়ী সমাধানের জন্য পাশে আরো একটি নতুন সেতুর নকশা প্রণয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। মহাসড়ক সচল রাখতে সংস্কারকাজ চলমান রাখা হয়েছে।’