
ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও সচেতনতা ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ৪ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
জেলা কমিটির সভাপতি ছাত্রনেতা সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ৪২ নং আদর্শ সরকারি বালক-বালিকা বিদ্যালয়, ৪৩ নং আদর্শ সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।
গণসংহতি আন্দোলন ও ছাত্র ফেডারেশন এর যৌথ উদ্যোগে নাসিক কর্মীদের মাধ্যমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশা নিধন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
এছাড়াও আদর্শ স্কুল ও গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুলে সচেতনতামূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করা হয়।
ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে প্রতিটি বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবী ভলান্টিয়ার দল গঠন করা হয়, যারা নিজেদের স্কুল, এলাকা ও পরিবারে ডেংগু প্রতিরোধে সচেতনতা ছড়াবে এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি সৃজয় সাহা, সহ-সাধারণ সম্পাদক মৌমিতা নূর, দপ্তর সম্পাদক শেখ সাদী, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক অনামিকা চৌধুরী, কার্যকরী সদস্য সিয়াম সরকার এবং ফতুল্লা অঞ্চলের সংগঠক সাইফ।
জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর বক্তব্য দেন জেলা সভাপতি সাইদুর রহমান। তিনি বলেন,“নারায়ণগঞ্জ জেলা এখন ডেংগু মহামারীর রেড জোনে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করুক। প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিধনের উদ্যোগ নিলে এই সংকট দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন,“ডেংগু এখন এক ভয়াবহ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আমরা চাই, প্রতিটি স্কুল থেকে গড়ে উঠুক শিক্ষার্থী-স্বেচ্ছাসেবীদের শক্তিশালী দল, যারা নিজেরা সচেতন হবে এবং অন্যদের সচেতন করবে। স্কুল, বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা এই ক্ষুদ্র কাজটিই হতে পারে জীবন রক্ষার বড় পদক্ষেপ।”
সভাপতি আরও জানান,“যেসব শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয়ভাবে কাজ করবে, তাদের জন্য জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকবে, যাতে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হয়।”
ক্যাম্পেইন শেষে প্রতিনিধি দল বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। সাইদুর রহমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশগত অবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,“যদি নিয়মিতভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, তাহলে ডেংগুর আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। আমরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”
জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রদত্ত ৪ দফা দাবি: প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে অন্তত একদিন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা দিবস পালনের নির্দেশ প্রদান। বিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে জমে থাকা পানি অপসারণ ও মশক নিধন কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করা।শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে “ডেঙ্গু প্রতিরোধ স্বেচ্ছাসেবী টিম” গঠনের নির্দেশ প্রদান। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বিতভাবে ডেংগু প্রতিরোধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বিশ্বাস করে শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের নেতৃত্বেই ডেংগু প্রতিরোধ আন্দোলন সফল হতে পারে। সংগঠনটি আগামীতেও জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।