
ফাইল ছবি
জুলাই বিপ্লবে নৃশংসতার মর্মান্তিক শিকার হওয়াদের একজন ছিল ছয় বছরের শিশু রিয়া গোপ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জে নিজ বাসার ছাদে গুলিবিদ্ধ হন এই শিশু। এরপর পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৪ জুলাই মারা যান রিয়া। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এই শিশুটির কথা স্মরণ করলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
বাঁধন সমকালকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে রিয়া গোপ নামে এক শিশু মারা যায়। ছাদে বসে খেলার সময় তার মাথায় গুলি লাগে। তার মৃত্যুটা আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। আমার সন্তানও ছাদে খেলতে যায়। তখন আমার কাছে মনে হয়েছে ওই শিশুটির জায়গায় তো আমার মেয়ে থাকতে পারত। আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে রিয়া গোপের কথা খুব মনে পড়ছে। বাববার চোখে ভেসে আসছে নিষ্পাপ শিশুটির মুখটি।’
রিয়া গোপ নারায়ণগঞ্জ শহরের নয়ামাটি এলাকার দীপক কুমার গোপ ও বিউটি ঘোষ দম্পতির একমাত্র সন্তান ছিল। গত বছর স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তিও হয়েছিল।
এই অভিনেত্রী বলেন, “শুরু থেকে ২৪’এর আন্দোলনের সঙ্গে থাকলেও রিয়া গোপের মৃত্যুর পর ‘দৃশ্যমাধ্যম সমাজ’ নামে একটি ব্যানারে আমরা একত্রিত হই। নির্মাতা আকরাম খানের ডাকে এখানে শিল্পীরা সাড়া দিয়েছিলাম। এরপর প্রত্যেক দিনই ছাত্রদের সঙ্গে মাঠে ছিলাম। আনন্দ সিনেমা হলের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। প্রেস ক্লাবে বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে ছাত্রদের মঞ্চে বক্তব্য রেখেছি। ৪ আগস্ট তারিখে পুরো দিনই শাহবাগে ছিলাম।”
আন্দোলনে নামার পর বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হুমকিও পেয়েছিলেন বাঁধন। অনেকে ফোন করে আন্দোলন থেকে তাকে দূরে থাকতেও বলেছেন।
বাঁধানের কথায়, ‘অনেক হুমকি পেয়েছি। নানা সংস্থা থেকে ফোন আসছিল। এমনকি মন্ত্রী পর্যায়ের মানুষরাও আমাকে আন্দোলনে না যাওয়ার জন্য ফোন দিয়েছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে আমাকে নানারকম থ্রেট করা হয়েছে। এমনকি অ্যাসিড মারা হবে বলেও হুমকি পেয়েছি। সেই হুমকি তখন কিছু মনে হয়নি। মনে হয়েছে মরতে তো একদিন হবেই। মরলে বীরের মত মরবো। বাঁচলেও সে ভাবেই বাঁচবো।”
বাঁধন বলেন, “৫ আগস্ট মিরপুর সাড়ে ১১ থেকে কালশী হয়ে গণভবনের দিকে যেতে যেতে আমি জেনেছি যে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। তখন রাস্তায় সবাই উল্লাস করছিল। কেউ নাচছিল। কেউ কান্না করছিল। কেউ স্লোগান দিচ্ছিল। সবার মধ্যেই আনন্দ দেখছিলাম।”