
জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, কোন কোন দল পিআর পদ্ধতি দাবী করছেন। তারা যেটা চাচ্ছেন ৩০০ আসনে পিআর। তার মানে এখানে আর কোন প্রার্থীর দরকার নাই। এটা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক জায়গা হলো না।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা আয়োজিত নবম জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় সাকি বলেন, ঐকমত্য কমিশনে নিন্ম কক্ষে পিআর পদ্ধতির কোন প্রস্তাবই ছিল না। পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব ছিল উচ্চ কক্ষে। আমরা বলেছিলাম ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করার জন্য উচ্চ কক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) আর নিন্ম কক্ষে সাধারণ যে ব্যবস্থা আছে সেভাবেই চলবে। কিন্তু জামায়াত ইসলামী এখন দেখি নিন্ম কক্ষেও পিআর চান আর সেটা নিয়ে তারা আন্দোলনে নেমে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, এটা নিয়ে কোন জোর জবরদস্তি করা যাবে না। তা না হলে দেশে অনিবার্য সংঘাত সৃষ্টি হবে। সেই সংঘাত আমরা চাই না। বাংলাদেশকে কেউ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিক, সেটা আমরা চাই না।
জোনায়েদ সাকি এসময় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দিকেও ইঙ্গিত করে বলেন, আমরা বিচার চাই, আমরা সংস্কার চাই এবং ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন সেটা ভণ্ডুল করার কোন ষড়যন্ত্র আমরা মানবো না। বাংলাদেশ একটা সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের একটা বিজয় হয়েছে, এখন আরেকটা বিজয় দরকার। রাষ্ট্র ও রাজনীতির মধ্যে স্থিতিশীলতা আনা জরুরি। জনগণ চাইলেই কেবল যে কোন বিষয় সংবিধানে যাবে। নিজেদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ঐকমত্য করে সংবিধানে যোগ করা যাবে না। প্রতিটা বিষয়ে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। সংস্কারের চূড়ান্ত ফয়সালা করতে হলে নির্বাচন লাগবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি আমরা যদি নতুন বন্দোবস্ত চাই, গণতন্ত্র চাই তাহলে বিচার, সংস্কার আর নির্বাচন আমাদের লাগবে। এই তিনটা যদি আমরা ঠিক মতো করতে না পারি তাহলে আমরা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় যে রাষ্ট্রব্যবস্থা, যে রাষ্ট্র আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখবে, যে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আমরা অংশীদার মনে করবো সেটা আমরা গড়ে তুলতে পারবো না। বিচার, ন্যায়বিচার খুব জরুরি। জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞ, ১৫ বছরের গুম-খুন, লুটপাট, দুর্নীতি সব কিছুর বিচার হতে হবে। এদেশের সকল অন্যায়ের বিচার হতে হবে। আর যে ব্যবস্থা ন্যায়বিচার দিতে পারে সে ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নবম জেলা সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সৃজয় সাহা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা তাসলিমা আক্তার, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী বিপ্লব খান, নির্বাহী সমন্বয়কারী পপি রানী সরকার, জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম এবং প্রচার সম্পাদক শুভ দেব।