
আবু হাসনাত শহীদ মোঃ বাদল
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মোঃ বাদল বলেছেন, হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই কোন ভেদাভেদ নাই, আর কোন ভেদাভেদ আছে আমাদের মাঝে? আমরা সবাই এক। আমার যে রক্ত বের হবে হিন্দুদেরও তাই। আমার এক চোখ এক নাক হিন্দুদেরও এটাই আল্লাহর বিধান। এটা মেনে নিতে হবে। ইসলাম ধর্ম বলেনি মসজিদ মন্দির এক জায়গায় ধর্মীয় উপাসনা করতে পারবে না।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সম্প্রীতি ও শান্তির শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রার আগে এক সংক্ষিপ্ত সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বাদল বলেন, নারায়ণগঞ্জের কবরস্থানে গেলে দেখবেন একদিকে মুসলমানদের কবর আরেকদিকে খ্রীষ্টানদের কবর হিন্দুদের শ্মশান। তারপর পাশে আছে বৌদ্ধদের কবর। সারা বাংলাদেশে আমরা একসাথে বসবাস করি। কোন মুসলমান অসুস্থ হলে কী হিন্দু ডাক্তার চিকিৎসা করে না। আবার দেশে চিকিৎসা করে মনের সান্ত্বনার জন্য চলে যাই ভারতে দেবীশেঠির কাছে। আল্লাহ কী বলেছে আমার চিকিৎসা হিন্দু করতে পারবে না। তাহলে কুমিল্লার ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা কী আমাদের লোক তারা কী বাঙালি, না। তার মৌলবাদী তাদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে।
তিনি বলেন, এ সমাবেশের নাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সমাবেশ। আর এখান থেকে আমরা যে যাত্রা করব সেটা হল শান্তির শোভাযাত্রা। কারন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য কিছু দল যারা নাকি একাত্তরের মত নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর স্লোগান দিয়ে পাকিস্তানি হানাদারদের সাহায্য করেছিলো। সে সময়ের দলগুলোর নাম ছিল জামায়াতে ইসলাম, নেজামে ইসলাম। তারা সেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে চায়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হত তাদের দ্বারা। এমনকি আমাদের মা বোনদের ইজ্জত লুন্ঠন করার জন্য পাকিস্তানিদের আলবদর রাজাকাররাঘর থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে পাকহানাদারদের কাছে উপঢৌকন হিসেবে তুলে দিত। এখানে তারা ধর্মের নাম বিক্রি করেছে, ধর্মকে কলঙ্কিত করেছে। আপনারা জানেন এ বাংলাদেশ হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রীষ্টান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশে হিন্দু মুসলমান সবাই ভাই ভাই।
তিনি আরও বলেন, যারা হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রীষ্টানের এই সাম্প্রতিক সম্প্রীতিতে আঘাত করতে চায় তাদের কী আপনারা এ বাংলার মাটিতে রাখবেন, রাখবেন না। তারা স্বাধীনতার শত্রু, ওরা একাত্তরের চেতনার বিরুদ্ধে। তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। ওরা জামাত শিবির, ওরা রাজাকার। ওদের বাংলার মাটিতে ঠাই থাকতে পারে না। বাংলাদেশ স্বাধীন করতে হিন্দুরা মায়ের মমতাকে ত্যাগ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, একই ভাবে মুসলমানরাও রক্ত ও জীবন দিয়েছিল। আমাদের একটাই চাওয়া ছিল, বাংলার মাটি শত্রুমুক্ত করতে হবে। স্বাধীন করতে হবে। এজন্য এই দেশ ও মাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাটি। এটা আমরা রক্ত দিয়ে জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব। নারায়ণগঞ্জের মাটিতে যখন শামসুজ্জোহা জীবিত ছিলে, আলী আহমদ চুনকা জীবিত ছিলেন আমরা জোহা চাচার নির্দেশে প্রত্যেকটা মন্ডপ প্রহরা দিয়েছি। আমি গর্বিত নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত সুন্দর ও সুক্ষ ভাবে ঘরে ঘরে গিয়ে খোজখবর নিচ্ছেন। আমরা প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানাই।