শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

|

জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

সোনারগাঁয়ে ৫০০ বছরের ‘পাগলা গাছের মেলা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ১৬ মে ২০২৫

সোনারগাঁয়ে ৫০০ বছরের ‘পাগলা গাছের মেলা’

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যোরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামে খুঁটিকে কেন্দ্র করে তিনদিন ব্যাপী পাগলা গাছের মেলা বসেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে শনিবার পর্যন্ত চলবে।

একটি গাছ বা খুঁটিকে কেন্দ্র করে এ ব্যতিক্রমধর্মী এ মেলা উদযাপন হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তবে তিনদিন ব্যাপী মেলা বসলেও পূজা ও অর্চনা হয় দু’দিন। এ মেলা পাগলা গাছের মেলা হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। হামছাদী গ্রামের বটতলায় মেলার পশরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানায়, মেলা যে খুঁটিকে গিয়ে করা হয় খুঁটিটি পূজা মণ্ডপের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে সারাবছর ডুবিয়ে রাখা হয়। পাগল ভক্তরা ভক্তি করার জন্য প্রতিবছর পুকুর থেকে খুঁটিটি তুলে দুধ দিয়ে গোসল করায়। এছাড়াও ফল-ফলাদি ঘি, খাসি ও পাঁঠাবলি দিয়ে পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করে।

পূজা শেষে খুঁটিটি আবার ওই পুকুরে পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। ওই মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের হাজার হাজার লোকজনের সমাগম ঘটে।

পাগলা গাছের মেলা উপলক্ষ্যে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন। তাছাড়া মেলায় নাগরদোলা, বাঁশের বাঁশি, কাঠের চেয়ার, হাতপাখা, চৌকি, মোড়া, চুড়ি প্লাস্টিকের খেলনা, মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রী সাজিয়ে বসেছে তারা।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে পুণ্যার্থীরা মেলায় অংশ নেয়ার জন্য ওই এলাকায় তাদের স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন।

পাগলা গাছের মেলার পুরোহিত তপন চক্রবর্তী বলেন, প্রতি বছর এ খুঁটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ পূজা অর্চনা করে থাকে। ফল-ফলাদি ঘি, খাসি ও পাঁঠাবলি দিয়ে পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করে। পূজা শেষে খুঁটিটি আবার পুকুরে পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। এই মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের হাজার হাজার লোকজনের সমাগম হয়।

পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কেশব চন্দ্র দাস জানান, এবারের মেলায় বিপুল সংখ্যক ভক্তদের আগমন ঘটেছে। মেলা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করার লক্ষ্যে এলাকায় নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলায় গীতা পাঠ, কীর্তনসহ সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের মনের বাসনা পূরণ করার জন্যই পাগলনাথের পূজা-অর্চনা করতে ছুটে আসেন ভক্তরা।