
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মহিলাসহ ১০ জন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার গুদারাঘাট ও মসলেন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের মান্দারপাড়া গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে মো.ডালিম মিয়া একই গ্রামের ওয়াদুদ বেপারীর ছেলে নুর মোহাম্মদ ওরফে নুরা পাগলাকে ৪ মাস আগে পিকআপ ভ্যান কেনার জন্য ১লাখ ২০ হাজার টাকা ধার দেন। টাকা ধার নেওয়ার পর থেকে ডালিমের সঙ্গে নুর মোহাম্মদ দেখা করেন না।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শান্তিরবাজার গুদারাঘাট এলাকায় ডালিমের সঙ্গে নুর মোহাম্মদের দেখা হয়। ওই সময়ে তার কাছে টাকা ফেরত চান ডালিম। এনিয়ে নুর মোহাম্মদের সঙ্গে ডালিমের তর্ক বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে উভয়ে মধ্যে ধ্বস্তাধন্তি হয়। পরে নুর মোহাম্মদ ডালিমকে ধাওয়া করে তার গ্যারেজে নিয়ে যায়। ডালিম ধাওয়া খেয়ে আত্মরক্ষার জন্য গ্যারেজে দরজা লাগিয়ে দেয়। এসময় নুর মোহাম্মদের সমর্থকরা এসে সেই গ্যারেজের দরজা, জানালা কুপিয়ে নষ্ট করে। তারা দ্বিতীয় দফায় মসলেন্দপুর গ্রামে নুর মোহাম্মদ ও হাবিবুর রহমান হাবুরে নেতৃত্বে শফিকুল ইসলাম, ফালাইন্না, আশিক, সুমন মিয়া, মোরছালিন, সৈকত মিয়া ও রিপন মিয়া লাঠিসোটা, দা, বল্লম, হকিস্টিক ও চাপাতি নিয়ে ডালিমের বাড়িতে গিয়ে হামলা করে। হামলাকারীরা শালিম, আব্দুল হাই, ওয়াসকুরুনী, রিনা বেগম, জয়নাল আবেদিনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাক্তকভাবে আহত করে। হামলার সময় ডালিমের লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তুলে নুর মোহাম্মদের সমর্থক শরীফ ও জনু মিয়া, রিপন মিয়াকে আহত করে। এক পর্যাায়ে বাড়িঘর ভাংচুর চালায়। পরে তারা বাড়ি থেকে দুটি গরু, একটি ছাগল, চারটি ভোড়া ও বাড়ির আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ডালিমের চাচাতো ভাই আহত আব্দুল হাই বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত ডালিম মিয়া জানান, নুর মোহাম্মদের কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে পিটিয়ে মারাক্তকভাবে আহত করে। পরে ধাওয়া করে না পেয়ে গ্যারেজ ভাংচুর চালায়। নুর মোহাম্মদ ও হাবুর নেতৃত্বে তাদের বাড়িতে গিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে তারা গরু, ছাগল, ভোড়া ও আসবাপত্র লুট করে নিয়ে যায়। তাদের ৮জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে।
অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তর্কবিতর্কের জেরে তার লোকজনের ওপর হামলা করে তিনজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত আহত করা হয়। তবে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা তারা ঘটাননি। তার লোকজনকে আহত করার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেবেন।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক(তদন্ত) মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান খান বলেন, হামলা ও ভাংচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এক পক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।