শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১১ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

তারা দিনে বিএনপি রাতে আওয়ামীলীগ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

তারা দিনে বিএনপি রাতে আওয়ামীলীগ!

ফাইল ছবি

সিদ্ধিরগঞ্জে রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ যেমন কয়েকটি ভাগে বিভক্ত তেমনি বিএনপিও কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির একটি গ্রুপ দিনের বেলায় বিএনপি রাজনীতি করলেও রাতের অন্ধকারে আওামীলীগের রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বিএনপির সকল কর্মসূচীতে তাঁরা অংশগ্রহণ করেন ডাক ঢোল পিটিয়ে। কিন্তু মামলা হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে রাতের বেলায় স্থানীয় আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে গোপনে মিটিং করেন বলে জানা গেছে।  

তাঁরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হাই রাজু, বিএনপি নেতা মো: আলতাফ হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি নেতা ও নাসিক ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: ইকবাল হোসেন, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন ওরফে মদদী সালাউদ্দিন, যুবদল নেতা এস.এম.আমিনুল হক টুটুল, যুবদল নেতা মো: মৃদুল, যুবদল নেতা মো: আসিফ, বিএনপি নেতা মো: জাকির হোসেন ও বিএনপি নেতা মো: নুরুউদ্দিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির এক নেতা বলেন, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন বিএনপি দিনে গরম বক্তব্য দেয়, রাতে বলে আমাদের দিকে খেয়াল রাইখেন। এখন দেখছি তার কথাই সঠিক। আমরা বিএনপির রাজনীতি করে একটার পর একটা মামলার আসামি হচ্ছি। মামলার ভয়ে পালিয়ে থাকতে হয়। আমরা মামলা খেয়ে ফেরারী দিন পার করায় ছেলে মেয়েদের মুখ পর্যন্ত দেখতি পারি না। আর তারা কিসের বিএনপি করে? তারা দেখি মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেও আবার আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে বসে চা খায়। তাহলে কি মামলা হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে তারা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে আতাত করে চলছে? এসব নেতাকর্মীদের জন্যই বিএনপির আজ এই দূরবস্থা।

শহিদুল নামে বিএনপির এক নেতা বলেন, জীবনে বিএনপির রাজনীতি করে মামলা ছাড়া কিছুই পাইনি। আওয়ামীলীগে যেমন হাইব্রিড রয়েছে ঠিক বিএনপিতেও হাইব্রিড নেতাকর্মী রয়েছে। এই হাইব্রিডদের কারনেই বিএনপি ধ্বংস হচ্ছে। তবে বিএনপির অনেক নেতাই আওয়মীলীগের নেতাদের সাথে ব্যবসায় জড়িত। যার ফলে দিনে বিএনপি করে রাতে আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে মিটিং করে। মামলা থেকে বাচঁতে তারা আওয়ামীলীগ নেতাদের মোটা অংকের টাকা দেয়াসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন।  

এদিকে অক্টোবর মাস থেকে নিয়মিত মাঠে থাকার পরিকল্পনা নিয়ে রাজপথে কর্মসূচি সাজাচ্ছে বিএনপি। একই ভাবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খালি মাঠে যেন বিএনপি গোল দিতে না পারে সেজন্য মাঠ দখলে আওয়ামীলীগও হাতে নিচ্ছে নানা কর্মসূচি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, যারা দিনে বিএনপি করে রাতে আওয়ামীলীগ করে তারা কখনো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কর্মী নয়। তারা হলেন প্রকৃত রাজাকার। তারা খন্দকার মোশতাকদের বংশধর। তারা কখনোই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে আব্দুল হাই রাজু আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আতাত রেখে বিএনপির রাজনীতি করছে, আলতাফ হোসেন তার সা¤্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে বর্তমানে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছেন, বিএনপি নেতা ও নাসিক ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: ইকবাল হোসেন তার ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ইয়াসিন মিয়ার সাথে আতাত করে প্রকাশ্যে বিএনপির রাজনীতি করছেন, সালাউদ্দিন, এস.এম.আমিনুল হক টুটুল, মৃদুল, মো: আসিফ. মো: জাকির হোসেন ও বিএনপি নেতা নুরুদ্দিনসহ যারা আছেন তারা সকলেই আওয়ামীলীগ নেতা ও নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলামের সাথে আতাত করে বিএনপির রাজনীতি করছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আমি বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি আপনারা এ বিষয়টি একটু দেখবেন। ভবিষ্যতে তাদের মত দুই নৌকায় ভর দেয়া নেতাকর্মীদের জন্য বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে বিবেদ সৃষ্টি হতে পারে।  

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হাই রাজুর সাথে মুঠোফোনে (ফোন নাম্বার-০১৭২০০২...২) একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

অন্যদিকে এ বিষয়ে জানতে বিএনপি নেতা ও নাসিক ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনের অফিসে গেলে সে এ বিষয় কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে বিষয়টি জানতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।