
ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন
গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিনিধি দল বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশ এবং ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন।
গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তরিকুল সুজন বলেন, আজ আমরা বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। কমপ্লেক্সের ভেতরের পরিবেশ, চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন করি। সেখানে আমরা দেখতে পাই, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জরুরি বিভাগের সংলগ্ন ড্রেনটিতে পুরাতন ময়লা পানি জমাট বেঁধে হয়ে উঠেছে ডেঙ্গু মশার প্রজননক্ষেত্র। একই সাথে জরুরি বিভাগের পেছনের অংশে সাধারণ বর্জ্য এবং মেডিকেল বর্জ্য একসাথে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও কমপ্লেক্সের ভেতরের আবাসিক এলাকার পরিত্যক্ত ভবনগুলো হয়ে উঠেছে স্থানীয় মাদকাসক্তদের নিরাপদ আশ্রয়। মাদকাসক্ত এবং স্থানীয় অপরাধীচক্র ভবনের দরজা-জানালা থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক সুইচ তার সবই চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে কেবল ভবনের ইটগুলো। কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম দেখতে গিয়ে, আমরা দেখি ওয়াশরুমগুলো অত্যন্ত নোংরা এবং অপরিচ্ছন্ন। কোথাও কোথাও বেসিন ব্যবহার উপযোগী নয়, আবার কোন কোন বেসিনের পানির কল ভাঙ্গা। এমনকি ওয়াশ রুমের ভেতরের সুইচও কাজ করে না। সাধারণ রোগীদের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, কমপ্লেক্সের ভেতরের পানি ব্যবহার উপযোগী নয়, চিকিৎসা সেবা নিতে আসা নাগরিকরা প্রত্যেকেই বাইরে থেকে পানির বোতল কিনে ব্যবহার করছেন। প্রতিদিনই বহু মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন। পর্যাপ্ত বেড না থাকার কারনে একই বেডে একাধিক রোগী ভর্তি নিতে হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড নেই। ফলে সাধারণ রোগী এবং ডেঙ্গু আক্রান্তরা একই সাথে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন।
তরিকুল সুজন আরো বলেন, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সিভিল সার্জনের আওতাধীন। নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন যতখানি বলেন, করেন তারচেয়ে অনেক কম।এবং যতখানি করেন, বলেন তারচেয়ে অনেক বেশি। বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ বেড থেকে ৫০ বেডে উন্নিত হলে জনবল এবং চিকিৎসক ৩১ বেডের রয়ে গেছে। প্রযোজন অনুসারে বাড়েনি জনবল এবং চিকিৎসক। এমনকি পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে রয়েছে নিরাপত্তাহীনতা। মেডিকেল বর্জ্য এবং সাধারণ বর্জ আলাদা করে অপসারণের কোন ব্যবস্থা নেই। এই সমস্ত দিকে সিভিল সার্জনের তদারকি কিংবা নজরদারি নেই। বরঞ্চ আমি আশঙ্কা করি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ব্যবসাকে একচেটিয়া এবং লাভজনক করার জন্য সরকারী হাসপাতালগুলোকে নোংরা এবং চিকিৎসা সেবাকে নামমাত্র করে রাখা হয়েছে। যেন সাধারণ নাগরিকরা সরকারী হাসপাতালে নয়, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের নেতৃত্ব পরিদর্শন দলে আরো উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী মোঃ বিপ্লব খান, জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর হোসেন আলম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা, গণসংহতি আন্দোলন বন্দর কমিটির সংগঠক ইমদাদ হোসেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মৃধা প্রমুখ।