বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

|

বৈশাখ ১১ ১৪৩১

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে নেতাকর্মীদের মিছিল শো-ডাউন, নিরাপত্তায় ঘেরা পূর্বাচল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৭:১২, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে নেতাকর্মীদের মিছিল শো-ডাউন, নিরাপত্তায় ঘেরা পূর্বাচল

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মিছিলসহ শো-ডাউন করে সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮ টার মধ্যেই মাঠে নেতাকর্মীতে পূর্ণ হয়ে যায়। সকাল ৯ টায় দেখা যায় মাঠের আশেপাশের সড়কগুলো দলীয় হাজার হাজার নেতাকর্মীতে পূর্ণ হয়ে গেছে। রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল মেট্রো রেলের ডিপো উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সকাল থেকে জেলার ফতুল্লা, সদর, সিদ্ধিরগঞ্জ, সোনারগাঁ, আড়াইহাজার, বন্দর উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশস্থলের পথ যেন মিছিলের পথে রূপ নেয় সকাল থেকে। মিছিলের এ পথে মিশে গেছে আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের মানুষের ঢল।

এদিকে রঙ বেরঙয়ের টিশার্ট, ক্যাপ, ব্যানার ফেস্টুন হাতে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে দলে দলে আসছেন নেত্রীকে দেখতে ও তার কথা শুনতে। জেলা আওয়ামীলীগ, মহানগর আওয়ামীলীগ, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জেলা ও মহানগর শাখা, উপজেলা শাখা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে আলাদা আলাদা ব্যানারে আসছেন নেতাকর্মীরা। 

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আগে থেকেই রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ সমর্থকরা প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা, ওয়ার্ডে ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়ে ব্যাপক প্রচার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে মোড়ে মোড়ে নির্মান করা হয়েছে তোরণ।

প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে জেলা, উপজেলা প্রশাসনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ করে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৩শ ফুট সড়কে তরুণ ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে পথঘাট।

সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পক্ষে হাজার হাজার নেতাকর্মী বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে মাঠে আসছেন।

এর মধ্যে একজন কর্মীকে দেখা যায় বসে থাকতে। সেই নারী কর্মীর নাম সুমি বেগম। কেন এত আগে আগে এখানে এসেছেন জানতে চাইতেই উত্তর দিলেন তিনি। বললেন, শুনেছি আমাদের উন্নয়নের কারিগর, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা আসছেন আমাদের এখানে। এ খবর শুনে কি আর ঘুম হয়। গত দুদিন ধরেই ঘুম আসেনা, জেগে থাকি। কাল রাতে এক মিনিটও ঘুম হয়নি, সকালে আলো দেখতেই পায়ে হেঁটে চলে এসেছি নেত্রীকে দেখতে, তার কথা শুনতে। তাকে দেখার ইচ্ছা পূরণ হলেই আমার শান্তি লাগবে।

সুমি বেগম রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের কামসাইর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, আমি বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক ভালোবাসি। শীতে শীতবস্ত্র, করোনায় খাদ্য সহায়তা, দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো, বিপদে সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসা, রমজানে খাদ্য সহায়তা, ঈদে ঈদ সামগ্রী বিতরণ সবকিছু মিলিয়ে বসুন্ধরা আমাদের রূপগঞ্জে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। এই সহায়তার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের কর্ণধারদের জানাই অন্তর থেকে ভালোবাসা।

তিনি বলেন, আমাদের দেশকে অন্ধকার থেকে আলোতে তুলেছেন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নের পর উন্নয়ন করে এখন দেশকে উন্নত দেশে পরিনত করেছেন তিনি। তার কারণে আজ আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি। আমরা পদ্মা সেতু করেছি, মেট্রোরেল করেছি আর তা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জন্য। আজ এখানে মেট্রো রেলের ডিপো উদ্বোধন করবেন নেত্রী। সেদিন আর বেশী দূরে নয় যেদিন উন্নত দেশগুলো আমাদের উন্নয়ন দেখতে এখানে আসবেন কারণ আমাদের এখন শেখ হাসিনা আছে যার হাত ধরে উন্নয়ন কিভাবে করতে হয় আমরা শিখেছি।

এর মধ্যে ঢাকা থেকে আগত আওয়ামীলীগ কর্মী মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা হয়। তিনি হাতে একটি বার্তা লিখে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন সমাবেশস্থলে। তার মাথায় ছিল নৌকা সাদৃশ ক্যাপ।

তার প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল,স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার বদ্ধ পরিকর, উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বার বার দরকার জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার। উন্নয়নের সরকার আওয়ামীলীগ সরকার। 

কথা হলে তিনি জানান, সকালে আলো দেখার সাথে সাথে তিনি সমাবেশে রওনা দেন। এর মাঝে তিনি এখানে আসার জন্য নৌকার আদলে ক্যাপ বানিয়েছেন। এটি পড়ে এবং প্ল্যাকার্ডটি নিয়ে তিনি এখানে আসেন। প্ল্যাকার্ডের লেখা তিনি নিজেই লিখেছেন। 

তিনি বলেন, উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আবার আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তর হবো যদি আবারো নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করা হয়। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার সরকারের বিকল্প নেই আর তাই তাকে আবারো জয়যুক্ত করতে হবে যেকোন মূল্যে।

এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রূপগঞ্জের পুর্বাচল এলাকা। নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে যানবাহন চলাচল। করা হচ্ছে তল্লাশি, রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সতর্ক অবস্থান ও নজরদারি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যেতে আসতে কারো যেন কোন সমস্যা না হয় এবং অনুষ্ঠানকে সুন্দর করতে সব ধরনের ব্যবস্থা জেলা প্রশাসন থেকে নেয়া হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, জেলা পুলিশ, র‍্যাবসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। আমরা সমাবেশে আগতদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে কাজ করেছি এবং করছি।