
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে দায়িত্বপালনকালে দলের বিভিন্ন কর্মসূচী পালনে আলোচিত ব্যর্থ নেতা হিসেবে পরিচিত লাভ করা নেতা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান আবারো ব্যাকফুটে চলে গেছেন। টানা কিছুদিন নেতাকর্মীদের নিয়ে সক্রিয় হতে চেষ্টা করলেও দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাৎ বার্ষিকীকে ঘিরে একেবারে নীরব অবস্থানে চলে গেছেন তিনি।
জানা যায়, দলের জেলার সভাপতির দায়িত্বপালনকালে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মূল সড়ক থেকে সরিয়ে অলিগলিতে কর্মসূচী পালন করতে নিয়ে যেতেন কাজী মনির। তার দায়িত্বকালে জেলা বিএনপি নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচী পালন করলে সেটি করতো নূর মসজিদের গলির ভেতরে যেটি এলাকার সড়ক হিসেবে পরিচিত। এরপর এসব ব্যর্থতায় তাকে গলির নেতা হিসেবে আখ্যা দেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। পরে কমিটি, রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয়তা, কাউন্সিলরে ব্যর্থতা, সড়কে কর্মসূচী পালন করতে না পারা, নেতাকর্মীদের রেখে বাইকে একাধিকবার পুলিশের ভয়ে পালিয়ে যাওয়াসহ নানা কারণে তাকে পদচ্যুত করে দল।
দলের নেতাকর্মীরা জানান, নির্বাচনের সময় এলে কাজী মনিরুজ্জামান জেগে উঠেন। জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নের আশায় আড়াল থেকে বেরিয়ে আসেন প্রকাশ্যে। এবারো দলের ভালো অবস্থা দেখে ও সামনে নির্বাচনকে ঘিরে বিগত কয়েকমাস কর্মসূচী পালন করতে সামনে এসেছিলেন তিনি। দলের বিভিন্ন কর্মসূচীকে নিজে থেকেই উপস্থিত হতেন। এর মধ্যে সেভাবে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না পারায় ও নেতাকর্মীদের আগ্রহ তার প্রতি না থাকায় ধীরে ধীরে আবার আড়ালে যেতে শুরু করেন। সর্বশেষ রূপগঞ্জে নির্বাচনকে ঘিরে নিজের অবস্থান না থাকায় ও মনোনয়নের আশা না দেখতে পেয়ে আবারো আড়াল হয়ে চলে যান নীরবে।
নেতাকর্মীরা জানান, রূপগঞ্জে বিএনপির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপুর নির্দেশে উপজেলাজুড়ে নেতাকর্মীরা সক্রিয় রয়েছে এবং কর্মসূচী পালন করছে। এতে করে কাজী মনিরুজ্জামান কিছুটা হতাশ। সেই হতাশা থেকে গলির নেতা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মনির রাজপথেও নামতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু যখন বুঝতে পারছেন তার নির্বাচনে মনোনয়ন পাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ তখন আর সামনে আসতে চাচ্ছেন না তিনি।
নেতাকর্মীদের মতে, দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে যেখানে দলের সর্বোচ্চ নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে দলটির তৃণমূল পর্যন্ত নিজ উদ্যোগে নানা কর্মসূচী দোয়া মিলাদ ও খাবার বিতরণ করছে সেখানে রূপগঞ্জে একটি কর্মসূচীও পালন করেননি তিনি। তার এহেন কান্ডে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত হতাশ। এর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে তার অনুগত নেতাকর্মীদের মধ্যেও। এরই মধ্যে অনেকে তার এসব কাজে তার রাজনীতি থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন।
অপরদিকে দিপু ভুঁইয়ার নির্দেশে রূপগঞ্জে এখন পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের ৪২ তম শাহাদাৎ বার্ষিকীকে ঘিরে ১৯টি কর্মসূচী পালন করেছেন নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে কাঞ্চনে ১৩ টি, রূপগঞ্জে ২টি, ভুলতা, মুড়াপাড়া, কায়েতপাড়া ও গোলাকান্দাইলে একটি করে কর্মসূচী পালিত হয়। দলের থানা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের উদ্যোগে ও দিপুর নির্দেশে এসব কর্মসূচীতে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।
এদিকে কাজী মনিরের এহেন কর্মকান্ডে তাকে রূপগঞ্জের রাজনীতি এখন ডেড হর্স হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাই সামনের দিনে এ ধরনের নিষ্ক্রিয় নেতাকে দল ঠিক কোথায় কিভাবে রাখবে সেটি দলের কেন্দ্রের উপর ছেড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।