সংগৃহীত
যান্ত্রিক জীবন থেকে বেরিয়ে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে গেলে মন যেমন প্রশান্ত হয়, একই সঙ্গে ফিরে পাওয়া যায় কর্মোদ্যম। ছুটির দিনগুলোতে কিংবা অবসরে সুন্দর সময় কাটাতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন রাজধানী লাগোয়া নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে।
সোনারগাঁ জাদুঘর
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনটিই সোনারগাঁ জাদুঘর হিসেবে পরিচিত। রাজধানী ঢাকা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ২৪ কিলোমিটার।
সোনারগাঁ একসময় মসলিনের জন্য জগতবিখ্যাত ছিল। এখনও মসলিনের বিকল্প জামদানি শাড়ি সরাসরি তৈরি করতে দেখা যাবে কারুপল্লীর ভেতরে। আছে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন জাদুঘর এবং ফাউন্ডেশন চত্বর। লেকঘেরা ফাউন্ডেশন চত্বরে রয়েছে কারুপল্লী, নৌকা ভ্রমণ ও টিকিট কেটে মাছ ধরার ব্যবস্থা।
বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম প্রধান ঈশা খাঁ দীর্ঘদিন এ সোনারগাঁ শাসন করেছেন। চারদিকে নদী দিয়ে ঘেরা ছিল বলে সহজে সোনারগাঁয়ে কোনো শত্রু আক্রমণ করতে পারতো না।
১৯৭৫ সালে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এ মূল্য ১শ’ টাকা। পানাম নগরী।
পানাম নগরী
বীর ঈশা খাঁর সময়কালে বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ের পানাম নগরী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল। সে সময় সোনারগাঁয়ের রাজকার্য পরিচালিত হতো এ নগরী থেকে। বর্তমানে যে পানাম দাঁড়িয়ে আছে তার অবকাঠামো ব্রিটিশ আমলের। প্রাচীন পানাম চাপা পড়ে আছে আধুনিক পানামের নিচে। সেকালে এখানে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য অট্টালিকা, মসজিদ, মন্দির, মঠ, ঠাকুরঘর, গোসলখানা, নাচঘর, খাজাঞ্চিখানা, টাকশাল, দরবার কক্ষ, প্রশস্ত দেয়াল, ভোজনালয়, বিচারালয়, প্রমোদকুঞ্জ ইত্যাদি।
পানাম নগরীতে দেখা যায় চারশ’ বছরের পুরনো মঠবাড়ি। এর পশ্চিমে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্য কুঠি ‘নীলকুঠি’ রয়েছে। আছে পোদ্দার বাড়ি, কাশিনাথের বাড়ি, সোনারগাঁয়ের একমাত্র আর্ট গ্যালারিসহ নানা প্রাচীন ভবন।
পানামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পঙ্খীরাজ খাল। শের শাহ’র আমলে নির্মিত সোনারগাঁ থেকে সিন্ধু পর্যন্ত প্রায় ৩০০ মাইলের ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড-ট্রাংক রোডের কিছু অস্তিত্ব আজও পানামে দেখা যায়।
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন থেকে মাত্র আধা কিলোমিটারের মতো দূরত্বে গোয়ালদী গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক পানাম নগর। এর পাশেই পানাম পুল। যারা সোনারগাঁ জাদুঘর দেখতে যান, একবারের জন্য হলেও তারা ঢুঁ মারেন এ নগরীতে।