মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

|

কার্তিক ৫ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

আপিলে না.গঞ্জের সাত খুনের মামলা ৪ সপ্তাহ মুলতবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১২:০৭, ২১ অক্টোবর ২০২৫

আপিলে না.গঞ্জের সাত খুনের মামলা ৪ সপ্তাহ মুলতবি

প্রতীকী ছবি

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করে হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের শুনানি চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি করা হয়েছে।

আসামি পক্ষের আবেদনে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের তিন দিন পর তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় নিহত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম।

সাত খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার চার সহকর্মী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

দুটি মামলার বিচারিক কার্যক্রম একসঙ্গে শেষ করে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নূর হোসেন ও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত। ৩৫ জন আসামির বাকি নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। পাশাপাশি ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি) হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

এরপর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা থেকে মামলার সব নথি বিজি প্রেসে পাঠানো হয়। বিজি প্রেস পেপারবুক প্রস্তুত করে একই বছরের ৭ মে হাইকোর্টে পাঠায়।

একই বছরের ২২ মে থেকে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। ৩৩ কার্যদিবসে উভয়পক্ষের শুনানি হয়।

২০১৭ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২৬ আসামির মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং বাকি ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলার মোট ৩৫ আসামির মধ্যে বাকি নয়জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডও বহাল রাখেন হাইকোর্ট।  

মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হচ্ছেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন এবং র‌্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মাসুদ রানা।

অন্য যে ১১ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রয়েছে, তারা হলেন- র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, আরওজি-১ এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়্যব আলী, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আলামিন শরীফ ও সৈনিক তাজুল ইসলাম।

অন্যদিকে সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হচ্ছেন- র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক সিপাহী আসাদুজ্জামান নূর ও সার্জেন্ট এনামুল কবির এবং নূর হোসেনের নয় সহযোগী মূর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, আবুল বাশার, রহম আলী, জামাল উদ্দিন সরদার, ভারতে গ্রেপ্তারকৃত সেলিম, সানাউল্লাহ সানা ও শাহজাহান।

বিচারিক আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া নয়জনও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা ও সদস্য। তাদের মধ্যে কনস্টেবল হাবিবুর রহমানের ১৭ বছর, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল বাবুল হাসান, কর্পোরাল মোখলেসুর রহমান, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন ও সিপাহী নুরুজ্জামানের ১০ বছর করে এবং এএসআই বজলুর রহমান ও হাবিলদার নাসির উদ্দিন সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। পরে আসামিরা আপিল করেন।