
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহিস্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারসহ আরও কয়েকজন বহিস্কৃত নেতা দলকে ভাঙতে সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপি থেকে বহিস্কৃত ও দলছুট নেতাদের ভাগিয়ে নিয়ে বিএনপির আদলে একটি মঞ্চ তৈরির জন্য তৈমূরসহ আরও বেশ কয়েকজন কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতা।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তৃণমূল বিএনপির সম্মেলনে দলটিতে যোগদান করেন তৈমূর। দলে যোগ দিয়েই মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন এই নেতা।
বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন বিদেশিদের চাপে সরকার বিএনপি সাদৃশ্য একটও প্ল্যাটফর্ম সাজিয়ে কিছু লোকদের ভাড়া করছে নির্বাচনে আনতে। মূলত বিএনপির আরও বেশ কয়েকজন বহিস্কৃত নেতা এ দলে যোগ দিতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে। সেক্ষেত্রে তৈমূররা তাদের সাথে উপর মহলের যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। এছাড়াও বিএনপি নির্বাচনে না এলে দলের নির্বাচনে যেতে ইচ্ছুক আরও বেশ কয়েকজন নেতা পরিস্থিতি বুঝে এ দলে আসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে তৈমূরের তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেয়া নিয়ে মাথা ঘামাতে দেখা যায়নি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবিষয়ে বলেন, বিএনপিতে এমন অনেক খড়কুটো ভেসে গেছে। এতে বিএনপির কিছুই আসে যায় না। বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল।
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহিস্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারসহ যারাই বিএনপির ক্ষতি করার চেষ্টা করছে তারা ক্ষমতাসীনদের উচ্ছিষ্টভোগী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমির খসরু বলেন, এদের আমরা চিনি না। এদের চেনার কোন ইচ্ছাও নেই। বাংলাদেশের মানুষ এমন উচ্ছিষ্টভোগীদের অনেক দেখেছে। এদের সাথে আরও কিছু উচ্ছিষ্টভোগী যোগ হলে আমাদের কিছু যায় আসে না।
তৃণমূল বিএনপিতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বহিস্কৃত নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারসহ অন্যন্যদের যোগদান করাকে শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেন, তৃণমূল বিএনপির বিষয়ে মুখ না খুলে পারলাম না। কত বড় বেইমানের রক্ত শরীরে বহমান থাকলে এই সময়ে দলের সাথে, দেশের সাথে, জনগণের সাথে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সাথে, শহীদদের রক্তের সাথে এই তামাশা করতে পারে। তোরা দল করবি কর, তোদের কোন আদর্শ থাকলে বানা। কিন্তু নাম আর প্রতীক চুরি করবে আর দেখাবে বিএনপি নির্বাচনে আসছে এটা পাগলেও খাবে না। এদের জানাযায় প্রমাণ হবে এদের কর্মের ফল।
তৈমূরের তৃণমূল বিএনপিতে যোগদানের ইস্যুতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন, মীরজাফররা যুগে যুগে চলে আসে। তিনি মীর জাফরের মতই কাজ করছেন। তৈমূর আলম খন্দকারের কোন নিজস্ব বলয় ছিল না। দলের ওপর ভর করে তিনি এগুলো দেখিয়েছে।
তৈমূরের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে তার পাশে নেই খোদ তার পরিবারের সদস্যরাও। তৈমূরের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলোর সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেছেন, তৈমূর আলম খন্দকার আমাদের পরিবারের একমাত্র ভরসাস্থল ও নীতি নির্ধারক। তবে তার বর্তমান রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সাথে আমরা একমত নই।
তৈমূরের একসময়কার একনিষ্ঠ কর্মীরাও তার এহেন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। অনেককেই তার এ সিদ্ধান্তের পর তৈমূরকে ভর্ৎসনা করতে দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ বলেছেন, সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দাঁড়িয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ও বিএনপির অনেক নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করে বিপদগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তৈমূর আলম খন্দকার। তাকে নারায়ণগঞ্জের মানুষ নিম্নমানের লোভী ও বাজে চরিত্রের মানুষ হিসেবেই ঘৃনা করবে এবং কোনদিন ক্ষমা করবে না।