বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

|

বৈশাখ ১৬ ১৪৩২

Advertisement
Narayanganj Post :: নারায়ণগঞ্জ পোস্ট

শামীম ওসমানের প্রধান সহযোগী নিজামের পার্টনার কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক! 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ১৪:১১, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৮:০২, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

শামীম ওসমানের প্রধান সহযোগী নিজামের পার্টনার কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক! 

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের অনুসারী ও প্রধান সহযোগী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত মোঃ আল আমিন ইকবালকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের কমিটিতেও আছেন এই ইকবাল।

কোন অদৃশ্য কারণে ঢাকা মহানগরীর মত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আওয়ামী লীগের একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ব্যবসায়ীক পার্টনার ও ঘনিষ্ঠ লোককে যুগ্ম আহ্বায়কের মত গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে। 

আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় না থেকেও ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় আল আমিন ইকবালকে। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটিতে দ্বিতীয় যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পান ইকবাল।

জানা যায়, অর্থের জোরেই আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও আঁতাত করে চলার পরেও কৃষকদলে পুনর্বাসিত হতে পেরেছেন এই ইকবাল। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়নের বাসিন্দা ইকবাল। এলাকাটি নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন। সেই সুবাদের শামীম ওসমানের অনুসারীদের মাধ্যমে ওসমান পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে নিজের ব্যাবসা বানিজ্য চালিয়ে যান ইকবাল।

মূলত সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে তার ব্যাবসা রয়েছে। সেই টাকা দিয়েই পাঁচ আগষ্টের পর বিএনপির রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছেন ইকবাল। পাঁচ আগষ্টে আওয়ামী লীগের পতনের পর ইদানীং সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। 

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের আমলে দুবাইয়ে কৃষক দলের শীর্ষ নেতারা গেলে তার সাথে সেখানে সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই সুবাদেই কৃষক দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হচ্ছেন এই ইকবাল।

এদিকে আওয়ামী লীগের আমলে অতাতঁ করে চলা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় নেতাকর্মীদের দলে পুনর্বাসিত করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন কৃষক দলের নেতাকর্মীরা। তারা জানান, দলের দুঃসময়ে যারা জীবন বাজি রেখে রাজপথে ছিল তাদের এখন মূল্যায়ন না করে দূরে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এখন টাকার বিনিময়ে বিতর্কিতদের বসানো হচ্ছে।

এবিষয়ে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ড. মোঃ শাহীন মিয়া জানান, কৃষকদলের একটা লোকও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না। সামাজিক, ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন ও শিল্পপতি লোকগুলোকে নিয়েই আমি এই কৃষকদলের কমিটি এনেছি। একটি লোক অপজিশনে থেকে যখন ব্যাবসা করে। সে আবার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে যেখানে সেখানে আবার গাজীর বাড়ি। সেখানে সামাজিক অনুষ্ঠানে তো সে যেতেই পারে। সেই ছবি তুলে কেউ যদি বলে সে আওয়ামী লীগের লোক তা কী করে হয়। দেওয়ান শিল্পপতি মানুষ, সে সিটি গ্রুপের সাথে জড়িত। সিটি গ্রুপের মালিক যদি গাজীর সাথে তাকে নিয়ে যায় তাহলে কী সে আওয়ামী লীগ হয়ে যায়। এই ছবিগুলো নিয়ে কিছু লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দলকে এবং দলের সুনামকে ক্ষুন্ন করছে। তারা দলের সুনাম চায় না। তারা দলকে বিতর্কিত করার পায়তারা করছে।

তিনি আরো বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে বলব দলের বিরুদ্ধে একশন নিবেন ঠিক আছে। যারা দলের অপকর্মের সাথে জড়িত, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাজের সাথে জড়িত তাদের বাছাই করে ব্যাবস্থা নিবেন এটাই আমার চাওয়া। একটু যাচাই বাছাই করে একশনে যাওয়া উচিত। যে মানুষগুলো সারা জীবন দলের হয়ে কাজ করেছে। ব্যাক্তিস্বার্থে, সমাজিক ও ব্যাবসায়ের স্বার্থে কিংবা বেচে থাকার জন্য দুঃশাসনের আমলে তারা একটু আঁতাত করে চলেছে। এজন্য সে আওয়ামী লীগ হয়ে যেতে পারে না। সে আওয়ামী লীগ হতে পারে না। তাকে আওয়ামী লীগ বললে আমাদের জন্য অন্যায় হবে।